22 Dec 2024, 05:45 pm

ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার কর আদায়কারীর বিরুদ্ধে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ; সাময়িক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

এম কবীর, ঝিনাইদহ : সরকারী অফিস থেকে পৌর কর আদায় হলেও ২৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকা জমা হয়নি পৌরসভার ফান্ডে। সরকারী ট্রেজারি থেকে বিল করে এই বিপুল পরিমান অর্থ নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভায়। ওই দপ্তরের কর আদায়কারী সাজ্জাদুর রহমান ৫ বছরের পৌর কর আদায় করে এই টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করে আত্মসাৎকৃত অর্থ পৌরসভার ফান্ডে ফেরৎ দেবার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শৈলকুপা উপজেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা রিসোর্স সেন্টার ও পৌর ভুমি অফিস প্রতি অর্থ বছর নিয়মিত কর দিয়ে আসলেও আদায়কৃত অর্থ জমা করা হয়নি। বছরের পর বছর সরকারী দপ্তর থেকে করের টাকা আদায় দেখিয়ে সাজ্জাদুর রহমান পকেটস্থ করলেও পৌর কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। সম্প্রতি ধরা পড়ার পর পৌর মেয়রের টনক নড়ে। প্রাপ্ত তথ্যমতে শৈলকুপা উপজেলা শিক্ষা অফিস ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ১ লাখ ৪৯ হাজার ২৩৩ টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৩ টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৭ টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯১০ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৪০৫ টাকা ও ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৩৫১ টাকা পৌর কর প্রদান করে। এছাড়া উপজেলা রিসোর্স সেন্টার ৪৫ হাজার ও শৈলকুপা পৌর ভুমি অফিস ৫৬ হাজার টাকা পৌর কর পরিশোধ করে। তদন্ত করলে এমন আরো অনেক অফিসের পৌর কর আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়তে পারে বলে অনেকের ধারণা। বিষয়টি নিয়ে কর আদায়কারী সাজ্জাদুর রহমান সোমবার দুপুরে বলেন, তিনি কর আদায় করে মেয়র কাজী আশরাফুল আজম ও সাবেক সচিব নুর মোহাম্মদের কাছে দিয়েছেন। তিনি কোন টাকা আত্মসাৎ করেননি। তিনি দাবী করেন, এই টাকা ট্রেজারি থেকে তুলে আনার পর সাবেক সচিব নুর মোহাম্মদ ৮ লাখ টাকা নিজে রেখে দেন। তিনিও সে টাকা পৌর ফান্ডে জমা করেননি বলে সাজ্জাদুর দাবী করেন। তবে শৈলকুপা পৌরসভার সাবেক সচিব ও বর্তমান ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ ৮ লাখ টাকা গ্রহনের কথা অস্বীকার করে জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাকে মিথ্যা ভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে শৈলকুপা পৌরসভার সচিব মোস্তাক আহম্মেদ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পৌরসভার প্রায় ২৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ফান্ডে জমা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। বিষয়টি জানান পর কর আদায়কারীকে প্রথমে শোকজ ও পরে সাময়িক বরখাস্ত করে আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরৎ দেবার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র কাজী আশরাফুল আজম বলেন, বিষয়টি প্রথমে আমরা কেউ জানতাম না। অনেক দিন ধরে সে এই কাজটি করে আসছে। সম্প্রতি তদন্তে টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি ধরা পড়ে। ফলে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় কর আদায়কারীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। মেয়র জানান, আত্মসাৎকৃত অর্থ পৌর কোষাগারে ফেরৎ না দিলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এদিকে বর্তমান ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ শৈলকুপা পৌরসভার সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। তিনি একাধিক ভাউচার জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকায় বিষয়টি তদন্তের উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। আজ ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক দপ্তরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম নুর মোহাম্মদের বিষয়টি তদন্ত করতে শৈলকুপায় যাবেন বলে মেয়রের কার্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 5384
  • Total Visits: 1409952
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1675

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)
  • ১৯শে জমাদিউস-সানি, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, বিকাল ৫:৪৫

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
      1
23242526272829
3031     
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018